জ্বর কি ?
জ্বর (যা পাইরেক্সিয়া নামেও পরিচিত) হচ্ছে
শারীরিক অসুস্থতার অন্যতম প্রধান লক্ষ্মণ, যা শরীরের
স্বাভাবিক তাপমাত্রার সীমার ৩৬.৫ - ৩৭.৫ °সে (৯৭.৭–৯৯.৫ °ফা) অধিক তাপমাত্রা নির্দেশ করে।
জেনে রাখা ভালো :-
পায়ু পথের তাপমাত্রা ৩৭.৫–৩৮.৩° সে. (৯৯.৫–১০০.৯° ফা) বা তার বেশি হলে,
মুখের তাপমাত্রা ৩৭.৭° সে. বা তার বেশি হলে,
বাহু বা কানের তাপমাত্রা ৩৭.২° সে.
বা তার বেশি হলে, তা জ্বর বলে গণ্য হয় ।
জ্বর কত প্রকার ও কি কি ?
দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তনের ধরনের উপর নির্ভর করে জ্বরকে
কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে,
- একটানা জ্বর : সারাদিন ধরে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর বেশি তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় না । যেমন – লোবারনিউমোনিয়া, টাইফয়েড, মূত্রনালির ইনফেকশন, ব্রুসেলসিস, টাইফাস ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে একটানা জ্বর পরিলক্ষিত হয় । টাইফয়েড রোগের ক্ষেত্রে জ্বরের একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিক দেখা যায় । জ্বর ধাপে ধাপে বাড়ে এবং উচ্চ তাপমাত্রায় অনেকক্ষণ থাকে ।
- নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বর : জ্বর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাড়ে এবং পরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায় । যেমন – ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, পাইয়েমিয়া, সেপ্টিসেমিয়া (রক্তের সংক্রমন) । এর প্রকারভেদ গুলো হল :
1. কুয়োটিডিয়ান জ্বর,যার পর্যায়কাল হল ২৪ ঘন্টা,সাধারণত ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়
।
2. টারশিয়ান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৪৮ ঘণ্টা, এটিও ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় ।
3. কোয়ার্টান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৭২ ঘন্টা, এটি দেখা যায় Plasmodium malariae জীবাণুর ক্ষেত্রে।
- স্বল্প বিরতিতে জ্বর : শরীরের তাপমাত্রা সারাদিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর চেয়ে বেশী উঠা নামা করে । যেমন – Infective endocarditis .
জ্বরের লক্ষণ গুলো কি কি ?
জ্বরের সাথে সাধারণত অসুস্থ্ভাব, যেমন অবসন্নতা, ক্ষুধামান্দ্য,
ঘুমঘুম ভাব,
শরীরে ব্যাথা, মনযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায় ।
জ্বর হলে কি করণীয় ?
জ্বর যদিও কোন রোগ নয়, এটি কে বড় কোন রোগের লক্ষন বলা যেতে পারে । কিন্তু ভাইরাস জনিত জ্বরের ক্ষেত্রে রোগীকে কিছু পরামর্শ প্রদান করা যেতে পারে । যেমন – রোগীর শরীর যদি খুব বেশি উতপ্ত থাকে তাহলে তার শরীর কে ঠাণ্ডা রাখার বাবস্থা করতে হবে । রোগীর শরীর কে সর্বদা মুছে দিতে হবে যাতে রোগীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে । রোগীর হাত এবং পায়ের তলা মুছে দিতে হবে । এতে রোগী স্বস্তি অনুভব করবে । রোগীকে একটু খোলা জায়গাতে রাখতে হবে যাতে করে রোগী আরও দ্রুত সুস্থ হয়ে যায় । এছাড়াও শরীরে যদি জ্বরের কারণে ব্যথার সৃষ্টি হয় তাহলে ঔষধ
হিসেবে প্যারাসিটামল গ্রহণ করা যাবে ।
জ্বরের জন্য কোন টেস্ট গুলো করা হয় ?
- রক্তের সাধারণ টেস্ট টি সি, ডি সি, ই এস আর।
- রক্তের পরীক্ষা । যেমন Widal, Febrile antigen .
- একুইট পর্যায়ে প্রোটিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
- পরজীবী, যেমন ফাইলেরিয়া, ম্যালেরিয়া।
- দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন যক্ষ্মার জন্য পি সি আর, এ এফ বি, কালচার সেনসিটিভিটি।
- ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ের জন্য এফ এন এ সি সাইটোলজি, বায়োপসি, লিমফোমা ও লিউকেমিয়া প্যানেল।
জ্বরের জন্য কোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়া যেতে পারে ?
- Azithrocin – 250 Mg
সকাল – রাত (খাবার পরে) … ৩ দিন খাবেন ।
অবশ্যই সাথে Paracitamol খাবেন অথবা
Napa-Extra 500 Mg খেতে পারেন
।
সাথে গ্যাসের ঔষধ Seclo – 20 Mg খাবেন ।
খাবার ৩০ মিনিট আগে খাবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : জ্বরের
জন্য এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।
'' শিশুদের যদি রাতে অতিরিক্ত জ্বর আসে এবং চিকিৎসকের কাছে নেয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না সেক্ষেত্রে
প্যারাসিট্যামল সাপোজিটারী ব্যাবহার করতে পারেন। ''
No comments:
Post a Comment